লাইলি মজনু (হার্ডকভার)

ভূমিকা

মধ্যযুগীয় পারস্যের কবি আবদ আর রহমান জামী পনেরো শতকে তৎকালীন আরবের সমাজব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে রচনা করেন অমর গ্রন্থ ‘লায়লা ওয়া মজনুন' । আরব্য মিথ আশ্রিত অধরা প্রেমের এক বিয়োগান্ত এ কাব্য। কাব্য লিখিত হওয়ার আগে শতাব্দী থেকে শতাব্দীতে এই মিথ আরবে প্রচলিত ছিল। পরবর্তীতে আরব জাহান পেরিয়ে এই প্রেমের আলেখ্য হয়ে ওঠে ইতিহাসের, বিশেষ করে এই উপমহাদেশীয় মুসলিম সমাজে কালজয়ী প্রেমের শ্রেষ্ঠ দুই চরিত্র, লাইলি ও মজনু। স্বর্গীয় প্রেমের প্রতীক হিসেবে মানা হয় এই জুটিকে। ১৫৬০-৭৫ সালের মধ্যে চট্টগ্রামের মধ্যযুগিয় কবি দৌলত উজির বাহরাম খা জামীর কাব্য অবলম্বনে বাংলায় রচনা করেন লাইলি-মজনু। প্রেমের ইতিহাসে, বিশেষ করে এই উপমহাদেশীয় মুসলিম সমাজে কালজয়ী হয়ে ওঠে দুটি চরিত্র, লাইলি ও মজনু।

লাইলি ও মজনু আমাদের দেশে সবচেয়ে আলোচিত প্রেমকাহিনির দুটি জনপ্রিয় চরিত্র। যদিও কালজয়ী এই প্রেমের কাহিনির সত্যাসত্য নিরূপণ করা এখন অনেকটাই কষ্টসাধ্য। সময়ের বিবর্তনে নানা জাতি আর নানা দেশের মানুষের মুখে মুখে লাইলি-মজনুর গল্প বিবর্তিত হয়েছে নাটক সিনেমাসহ গদ্য-পদ্য নানাভাবে। যদিও অধিকাংশ কাহিনিতেই নায়ক মজনু আর্বিভূত হয়েছেন একজন আমিরের পুত্র হিসেবে। কখনো তাকে উল্লেখ করা হয়েছে কবি কখনো বা ভাস্কর হিসেবে। অধিকাংশের মতে এটি কোনো কল্পকাহিনি নয় ।

আমরা যাকে মজনু বলে জানি, তার নাম আসলে কায়েস ইবনে আল- মুল্লাওয়াহার। আর লাইলির নাম লায়লা আল আমিরিয়া। প্রেমে উন্মাদ হয়ে যাবার পর কায়েসকে সেকালের প্রথা অনুযায়ী ‘মজনু' বলে ডাকা হতো, যার বাংলা অর্থ প্রেমোন্মাদ। একজন আধুনিক নগর সাহিত্যিক হিসেবে পাঠকের জন্য লাইলি- মজনুকে আবার নতুন করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এটা অনেকটা নতুন মোড়কে পুরাতন দ্রব্য পরিবেশনের মতো ।

রাশেদ মামুন